October 9, 2024, 10:27 am

সংবাদ শিরোনাম
আসন্ন শারদীয়া দুর্গাপূজা শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রশাসন ও জনগণের প্রীতি আহ্বান – পর্ব ৮ প্রশাসন সংস্থা ব্রিটিশ আইনের মাধ্যমে শাসন ব্যবস্থা চলতে পারে না-পর্ব ৭ মাতৃভূমির এক ইঞ্চি জমি ছাড় দেওয়া হবে না, পর্ব ৬ স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমি রক্ষা করতে হলে প্রতিটি ঘরে সেনাবাহিনী তৈরি করতে হবে(পর্ব-৫) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জামায়াত নেতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিনের স্বাধীন সার্বভৌম মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে সশস্ত্র ট্রেনিং এর প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী অভিভাবক ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কমিটির (পর্ব- ৪) ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে গড়তে হলে সংস্কার প্রয়োজন=== বৈষম্য বিরোধী অভিভাব ছাত্র শ্রমিক জনতা ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত নাটোর পল্লী বিদ্যুত সমিতিতে অদ্ভুতুরে কাণ্ডকীর্তি ভোলা বোরহানউদ্দিনে প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকগণের ১০ম গ্রেডের দাবিতে মানববন্ধন
বাংলাদেশে নার্সদের পদোন্নতি নিয়ে চরম অব্যবস্থাপনা।ছবি:সংগৃহীত

বাংলাদেশে নার্সদের পদোন্নতি নিয়ে চরম অব্যবস্থাপনা

এ পর্যন্ত মহামারী মরন ব্যাধী করোনায় আক্রান্ত ১৬৭৮, মারা গেছেন আট জন, ঝুঁকির মধ্যে মমতা নিয়ে রোগীর সেবা দিচ্ছেন তারা

মোহাম্মদ ইকবাল হাসান সরকারঃ

বাংলাদেশে নার্সদের পদোন্নতি নিয়ে চরম অব্যবস্থাপনা।ছবি:সংগৃহীত

বাংলাদেশে নার্সিং সেক্টরে চরম অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে।নার্সিং কলেজে নার্সদের দীর্ঘদিন পদোন্নতি নেই।শিক্ষকরা চরম নিষ্ঠুরতার শিকার।একটি মহল চায় না নার্সদের পদোন্নতি।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতো নার্সিং অধিদপ্তরে যাতে শীর্ষ পদগুলোতে আসতে না পারে সেজন্য একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।আর এর মূলে রয়েছে বড় দুর্নীতি।অথচ চিকিত্সা সেবায় নার্সদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি চলছে।ঝুঁকির মধ্যেও মমতা নিয়ে রোগীর পাশে রয়েছেন করোনাযুদ্ধে ফ্রন্টফাইটার দেশের নার্সরা। ইতিমধ্যে ১ হাজার ৬৭৮ জন নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।মারা গেছেন আট জন নার্স। পিপিই, মাস্ক ও সু-কভারও ঠিকমতো পাননি নার্সরা। যেটুকু পেয়েছেন তার মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। অথচ দেশের ক্রান্তিলগ্নে অতন্দ্র প্রহরীর মতো নার্সরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। নার্স ছাড়া পরিপূর্ণ চিকিত্সা সেবা সম্ভব নয় বলেও বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা জানিয়েছেন।এ সরকারের আমলে এ পর্যন্ত ৩০ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটি স্বাস্থ্য খাতে বিরল ঘটনা।এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. জাহিদ মালেক বলেন, করোনাকালে নার্সরা জীবনবাজি রেখে চিকিত্সা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।তাদের পেশাগত মান উন্নয়নে সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।নার্সদের বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।বর্তমান পরিস্থিতিতে একজন চিকিত্সকের পাশে থেকে একজন নার্স অনেক বেশি দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।চিকিত্সকরা ব্যবস্থাপত্র দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন।কিন্তু তার ওষুধ খাওয়ানো থেকে সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকেন নার্সরা।একজন নার্সই পারেন তার সার্বক্ষণিক ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে রোগীর মানসিক যন্ত্রণা বা ভীতি কমিয়ে দিতে।২০০৯ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নার্সিং শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে আটটি নার্সিং ইনস্টিটিউটকে নার্সিং কলেজে রূপান্তর করেন।এন্ট্রি পয়েন্টে সিনিয়র স্টাফ নার্সদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দেন।প্রয়াত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ২৬৪ জন নার্সকে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণিতে পিএসসির মাধ্যমে উন্নীত করেন।এরপর আর কোনো পদোন্নতি হয়নি।কিন্তু নার্সিং শিক্ষা খাতে কোনো অগ্রগতি আসেনি।কলেজগুলোতে পদ বিন্যাস হয়নি।কলেজগুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে উচ্চতর ডিগ্রিধারীদেরকে দিয়ে নিজ বেতনে চালানো হচ্ছে। তারা হলেন সিনিয়র স্টাফ নার্স।প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও পদ বিন্যাস কেন হয়নি, তার সদুত্তর কেউ দিতে পারছেন না। নার্সিং অধিদপ্তরে মহাপরিচালক পর্যন্ত বসেন। কিন্তু মনে হয় যেন অনভিজ্ঞ দিয়ে চলছে এই অধিদপ্তর।কয়েক শ’ সিনিয়র স্টাফ নার্স আছেন যারা দেশ-বিদেশের উচ্চতর ডিগ্রিধারী।পদ বিন্যাস না করার কারণে তারা সিনিয়র স্টাফ নার্সই থেকে যাচ্ছেন।এ সংক্রান্ত কোনো ফাইল অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ে গেলে তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।এক পর্যায়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফাইল আটকা পড়ে। অথচ এটি হওয়ার কথা নয়।আমলাদের মধ্যে একটি গ্রুপ আছে, যারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতো নার্সিং অধিদপ্তরও নার্সদের দিয়ে পরিচালিত হোক তারা তা চান না।কয়েক জন শিক্ষক জানান, তাদের কারো চাকরি এক মাস, ছয় মাস বা এক বছর আছে।এত অভিজ্ঞতার পরও তাদের কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি।গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে বসানো হয়নি। নার্সিংয়ে উচ্চশিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। নিয়ম অনুযায়ী সেখানে অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপকদের শিক্ষা দেওয়ার কথা।অন্যান্য নার্সিং কলেজেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানেও চরম অব্যবস্থা চলছে।শিক্ষার মান উন্নয়নে চেষ্টা হচ্ছে না।জানা গেছে, নার্সিং শিক্ষা খাতে পদ বিন্যাসের বিষয়টি ফাইলবন্দি অবস্থায় আছে।বেশ কয়েকবার ফাইল চালাচালিও হয়েছে।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।আবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে।এ সংক্রান্ত ফাইলটি সেখানেই পড়ে আছে।নার্সিং অব্যবস্থাপনার কারণ সম্পর্কে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মন্ত্রণালয়ের একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা চান না নার্সিং শিক্ষার মান উন্নয়ন হোক, সেখানে পদ সৃষ্টি হোক।এই শিক্ষার মান উন্নয়নে অনেক কর্মসূচি আছে, এসব কর্মসূচিতে অযোগ্যদের পাঠানো হয়। কাদের পাঠানো হবে সেটা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে।তারা দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করে আসছে।নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখার স্বার্থে তারা প্রশাসনের অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের দিয়ে নার্সিং অধিদপ্তরের অধিকাংশ কার্যক্রম চালাচ্ছেন।তারা চান নার্সদের মধ্যে একটা হট্টগোল পাকানো।জানা গেছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রশিক্ষণে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে।কমিটিতে নার্সিংয়ে শিক্ষার কোনো লোককে রাখা হয়নি।রাখা হয়েছে কয়েক জন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে।যারা শিক্ষার মান উন্নয়নে অদক্ষ তাদের অনেককে এই কমিটিতে রাখা হয়েছে।প্রশিক্ষণের নামে সিংহভাগ টাকা আত্মসাত্ হয়ে যায়।এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কারণে অধিদপ্তর করার পরেও শিক্ষার মান উন্নয়নে কোনো অগ্রগতি আসছে না।ইতিমধ্যে শিক্ষক নিয়োগের একটি সার্কুলার জারি হয়েছে।পিএসসির মাধ্যমে এ নিয়োগ হবে।যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি পাওয়ার কথা।অথচ সেখানে ৫২ বছর বয়স নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে অধিদপ্তর থেকে। আসলে পদোন্নতি নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে।এতে নার্সদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।দেশের চিকিত্সাব্যবস্থা পিছিয়ে যাওয়ার মূল কারণ আমলাদের ষড়যন্ত্র।অথচ বাংলাদেশের ডাক্তার-নার্সরা অনেক অভিজ্ঞ।সিঙ্গাপুর যা পারেনি, বাংলাদেশের ডাক্তার-নার্সরা তা পেরেছেন।করোনা দুর্যোগেও মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে আক্রান্ত রোগীর পাশে থেকে তারা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভানেত্রী ইসমত আরা বলেন, নার্সিং অধিদপ্তর শিক্ষক নিয়োগের যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে তা বিধিমালার সঙ্গে মিল নেই এবং সাংঘর্ষিক।ছাত্র-শিক্ষক একসঙ্গে পরীক্ষা দেবেন—নার্সদের আর কত নিচে নামাবে।এটি সামাজিক ও পারিবারিকভাবেও তাদের হেয় করছে।অবিলম্বে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে জ্যেষ্ঠতা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পিএসসির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/১৯ জুলাই ২০২০/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর